খবরের বিস্তারিত...

জঙ্গীবাদ দমনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করছে ইসলামী ছাত্রসেনা

জঙ্গীবাদ দমনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করছে ইসলামী ছাত্রসেনা: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রসেনার ৩ যুগ পূর্তি সমাবেশে সৈয়দ বাহাদুর শাহ্ মোজাদ্দেদী

জানু. 25, 2016 সাংগঠনিক খবর

দেশের ছাত্র সমাজকে বাদ দিয়ে জাতীয় জীবনে কাংখিত উন্নয়ন অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অর্জন মোটেও সম্ভব নয়। ইসলামের নামে  জঙ্গীবাদী প্রতিরোধে সম্মিলিত জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই।

অহিংস ছাত্ররাজনীতি অনুপম মডেল ইসলামী ছাত্রসেনার ৩ যুগ পূর্তি উৎসব উদযাপন উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এক বিশাল ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান পীরে ত্বরিক্বত আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ্ মোজাদ্দেদী।

উক্ত সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জননেতা অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর। সমাবেশে আর বক্তব্য রাখেন এডভোকেট এম আবু নাছের তালুকদার অধ্যক্ষ মাওলানা এস.এম. ফরিদউদ্দীন, এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, আলহাজ্ব এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুর, আলহাজ্ব সিরাজউদ্দিন তৈয়বী, আলহাজ্ব কুতুবুল হাছান চৌধুরী, রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ।

ইসলামী ছাত্রসেনার সংগ্রামী সভাপতি ছাত্রনেতা এম মনির হোসাইনের সভাপতিত্বে ও ছাত্রসেনার সাধারন সম্পাদক ছাত্রনেতা এম. কফিল উদ্দিন রানার ও এম নঈমউদ্দিনের সঞ্চলনে ছাত্রসেনার প্রাপ্তন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বৃন্দ সহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান পীরে ত্বরিকত আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ্ মোজাদ্দেদী বলেন, এদেশের গৌরবোজ্জল সকল আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রসমাজের ত্যাগী ভূমিকা অদ্যবধি দেদীপ্যমান। ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৬২ শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ এর ৬ দফা আন্দোলন ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান,৭১ এর সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ, সর্বোপরি ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী গন আন্দোলন সহ এযাবৎ কালের সংঘটিত সর্বপ্রকার আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্র সমাজের ঐতিহাসিক ভূমিকা সর্বজন বিদিত। শুধু তাই নয়- এদেশের সকল প্রকার জাতীয় অর্জনসমূহের পরতে পরতে প্রতিবিম্বিত হয়েছে ছাত্র সমাজের বীরোচিত ভূমিকা। দেশমাতৃকার জন্য অকুতোভয় ছাত্রদের বুকচিতিয়ে অকাতরে প্রান বিসর্জন দেয়ার মত নজির পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

ছাত্ররা কোন নির্জন দ্বীপের বাসিন্দা নয় এরা এদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এদের বাদ দিয়ে জাতির কাংখিত উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অর্জন মোটেও সম্ভব নয় বলে তিনি মনে করে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে তিনি আরো বলেন, গোটা দেশ এক সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য । দেশের রাজনীতিবিদরা নিজ নিজ স্বার্থ ও দলীয় নিয়ম নীতির অশুভ প্রভাব বলয়ের আষ্টে-পৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়ায় সুস্থ ধারার রাজনীতি আজ করুন অবস্থা। অন্যায়, অত্যাচার, পাপাচার, দুর্বৃত্তায়ন, হাইজ্যাক, লুন্ঠন, ইভটিজিং সহ নানাবিধ অপরাধ প্রবনতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে জাতীয় জীবনে দূর্বিসহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। আইনের রক্ষক হিসেবে খ্যাত প্রশাসনিক সেক্টর সমূহ বিবিধ অনৈতিকতার সাথে জড়িয়ে পড়ায় আইনের শাসনের প্রতি জনগনের আস্থার সংকট তৈরী হয়েছে। ক্রমবর্ধমান নাশকতা, গুপ্তহত্যা ও বিচার বর্হির্ভূত খুন গোটা দেশকে আতংকের জনপদে পরিনত করেছে।

অব্যাহত গ্যাস সংকট ও বিদ্যুতের লোড শেডিং এর কারনে উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ফলে অসংখ্য মিল কারখানায় কর্তপক্ষের লে-অফ ঘোষনা সহ কারখানায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে জ্যামিতিক হারে। রপ্তানিমূখী পোশাক শিল্পখাতে চরম নৈরাজ্য ও অস্থিরতা বিরাজ করায় ক্রমাগত রপ্তানী আয় হ্রাস পেয়ে জাতীয় অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। তাই এই পরিস্থিতি উত্তরণে গনতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশে সুস্থধারার রাজনৈতিক চর্চা ও যথার্থ অনুশীলনের বিকল্প নাই।

সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জননেতা অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর বলেন ছাত্ররা অধিকতর পেশিশক্তি ও সন্ত্রাস নির্ভর হয়ে পড়ায় গোটা ছাত্র রাজনীতিই আজ কলুষিত। হলদখল আধিপত্য বিস্থারের অসম লড়াই, সন্ত্রাস, টেন্ডারবাজী, মাস্তানী, হিপ্পিগিরী ইত্যাদি বর্তমানে ছাত্র রাজনীতির মূল প্রতিপাদ্য হওয়ায় ছাত্ররা ক্রমাগত বিভিন্ন অপরাধের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। কোথাও কোন দখল বেদখলের প্রশ্ন আসলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ভাড়াটে মাস্তান পাওয়া যায় এমনটি এখন প্রতিষ্ঠিত সত্য ছাত্র সমাজের গৌরবোজ্জল অতীত এখন শুধু মিউজিয়ামে শোভাপায়। তাই একটি আদর্শিক প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে যা ইসলামী ভাবাদর্শে গঠিত ইসলামী ছাত্রসেনার বিজ্ঞান সম্মত পরিক্ষিত কর্মসূচীর যথার্থ বাস্তবায়নের মধ্যদিয়েই ছাত্র রাজনীতিতে একটি গুণগত পরিবর্তন আনা সম্ভব।

ইসলামী ছাত্রসেনা কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা এম. মনির হোসাইন বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। যে জাতি যত বেশী শিক্ষিত, সে জাতি তত উন্নত। তা সত্ত্বেও এদেশে আদর্শ ও নৈতিক শিক্ষা বিরোধী নানাবিধ ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষার সম্প্রসারনে রাষ্ট্রৗয় উদ্যোগ প্রয়োজনের অপ্রতুলতার সুযোগে বেসরকারিভাবে ব্যাঙের ছাতার মত শিক্ষালয় প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষাকে শতভাগ বানিজ্যিক পণ্যে পরিণত করেছে। স্বাধীনতার সুদীর্ঘ ৪৫ বছর পার হলেও সবার জন্য শিক্ষার অধিকার বাস্তবায়নে রাজপথে আন্দোলন করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। যা কোন ভাবেই কাক্ষিত নয়।

Comments

comments